বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা
১৯৯৮-৯৯ অর্থ বছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলাদের ভাতা কর্মসূচি প্রবর্তন করা হয়। ঐ অর্থ বছরে ৪ লক্ষ ৩ হাজার ১১০ জনকে এককালীন মাসিক ১০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হয়। ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে এ কর্মসূচিটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।
বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়নে অধিকতর গতিশীলতা আনয়ণের জন্য সরকার পুনরায় ২০১০-১১ অর্থ বছরে এ কর্মসূচি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত হওয়ার পর এ কর্মসূচিতে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য বিদ্যমান বাস্তবায়ন নীতিমালা সংশোধন করে যুগোপযোগীকরণ, ডাটাবেইজ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সে সময়ে ভাতাভোগীর সংখ্যা ছিল ৯.২০ লক্ষ জন এবং জনপ্রতি মাসিক ভাতার পরিমাণ ছিল ৩০০ টাকা। বর্তমানে এ কর্মসূচির সকল উপকারভোগীকে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার নগদ ও বিকাশ এবং এজেন্ট ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে জিটুপি পদ্ধতিতে (গভর্নমেন্ট টু পারসন) সফলভাবে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এ কর্মসূচির আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ২৭ লক্ষ ৭৫ হাজার জনের জন্য জনপ্রতি মাসিক ৫৫০ টাকা হারে মোট ১৮৪৪.৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে । খালিয়াজুরী উপজেলায় বর্তমানে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা পায় ৩৬৪৫ জন।
বাস্তবায়নকারী দপ্তর: সমাজসেবা অধিদপ্তর
কার্যক্রম শুরুর বছর: ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছর
ভিশন ও মিশন:
ভিশন:
ভিশন দেশের দুঃস্থ, অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত, তালাকপ্রাপ্ত ও স্বামী নিগৃহীতা এবং বিধবাদের সামাজিক সুরক্ষা, কল্যাণ ও উন্নয়ন।
মিশন:
১. বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধান;
২. পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি;
৩. আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে তাদের মনোবল জোরদারকরণ;
৪. দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করা;
৫. চিকিৎসা ও পুষ্টি সরবরাহ বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান;
৬. বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের কল্যাণ ও সামাজিক সুরক্ষায় সরকার কর্তৃক গৃহীত স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় সন্নিবেশিত বিভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখা।
বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতার সংজ্ঞা:
বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের ভাতা কর্মসূচির আওতায় 'বিধবা' বলতে যাদের স্বামী মৃত এবং 'স্বামী নিগৃহীতা' বলতে যারা স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত বা অন্য যে কোন কারণে অন্তত ০২ (দুই) বছর যাবৎ স্বামীর ভরণ পোষণ থেকে বঞ্চিত বা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তাদেরকেই বুঝানো হবে।
প্রার্থী নির্বাচনের মানদন্ড:
(ক) নাগরিকত্ব: প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে;
(খ) বয়স: বয়স অবশ্যই ১৮ (আঠারো) বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে। তবে সর্বোচ্চ বয়সের বিধবা /স্বামী নিগৃহীতাকে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে;
(গ) স্বাস্থ্যগত অবস্থা: যিনি শারীরিকভাবে অক্ষম অর্থাৎ সম্পূর্ণরূপে কর্মক্ষমতাহীন তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে;
(ঘ) আর্থ-সামাজিক অবস্থা:
১. আর্থিক অবস্থার ক্ষেত্রে: নিঃস্ব, উদ্বাস্তু ও ভূমিহীনকে ক্রমানুসারে অগ্রাধিকার দিতে হবে;
২. সামাজিক অবস্থার ক্ষেত্রে: শিশু সন্তান রয়েছে এমন বিধবা/স্বামী নিগৃহীতা, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, নিঃসন্তান মহিলাদের ক্রমানুসারে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
ভাতা প্রাপ্তির যোগ্যতা ও শর্তাবলি:
১. সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে;
২. জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে;
৩. বয়স: বয়স অবশ্যই ১৮ (আঠারো) বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে;
৪. যিনি দুঃস্থ, অসহায়, যার ১৮ (আঠারো) বছর বয়সের নিচে ২টি সন্তান রয়েছে এবং যিনি অসুস্থ্ তিনি ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন;
৫. প্রার্থীর বার্ষিক গড় আয় অনূর্ধ্ব ১৫,০০০ (পনের হাজার) টাকা হতে হবে;
৬. বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতাদের মধ্যে যারা বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির বয়সে যখন উপনীত হবেন, তাদেরকে তখন বয়স্ক ভাতা কর্মসূচিতে স্থানান্তর করা যাবে;
৭. বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হতে হবে।
ভাতা প্রাপ্তির অযোগ্যতা:
১. সরকারি কর্মচারী হিসেবে পেনশনভোগী হলে;
২. দুঃস্থ মহিলা হিসেবে ভিজিডি কার্ডধারী;
৩. অন্য কোনোভাবে নিয়মিত সরকারি অনুদান/ভাতা প্রাপ্ত হলে;
৪. কোনো বেসরকারি সংস্থা/সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হতে নিয়মিতভাবে আর্থিক অনুদান/ভাতা প্রাপ্ত হলে;
৫. পূনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে অথবা স্বামীর সাথে বসবাস শুরু করলে।
স্বাক্ষরিত
মোঃ রুবেল মিয়া
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার(অঃদা)
খালিয়াজুরী,নেত্রকোণা
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS